সিবিএন ডেস্ক

ভারতে ওয়াকফ বিল পাশ হওয়ার পর মুসলিম সমাজে সৃষ্টি হয়েছে দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা। এমন প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বুধবার (৯ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “দিদি আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে, বাংলায় কোনো বিভাজন হবে না।”

বৃহস্পতিবার জৈন সম্প্রদায়ের মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার ‘নবকার মহামন্ত্র দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। সেখানেই তিনি জানান, “আমি জানি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দুঃখ আছে। কিন্তু বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে বিভাজন হয়। সবাইকে একসঙ্গে থেকে বাঁচতে হবে। জিও, জিনে দো (বাঁচুন, বাঁচতে দিন)।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা সবাই একসঙ্গে বাঁচার কথা বলুন। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেয়। আমি বলছি, দিদি আছে, দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। আপনারা উসকানিতে পা দেবেন না।”

উল্লেখ্য, ওয়াকফ বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাতে সই করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ইতোমধ্যে আইনের গেজেট নোটিফিকেশনও প্রকাশ হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াকফ আইনকে ‘সমগ্র সমাজ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থে’ বলে মন্তব্য করে সংসদকে ধন্যবাদ জানান। তার মতে, “ওয়াকফের পবিত্র চেতনা ও মুসলিমদের অধিকার এই আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত হবে।”

ওয়াকফ কী?

ওয়াকফ শব্দটি এসেছে আরবি ‘ওয়াকাফা’ শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘সম্পত্তির হস্তান্তর’। ভারতে মুসলিম আইন অনুযায়ী কেউ ধর্মীয় বা জনকল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে তার সম্পত্তি দান করলে তা ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হয়। এর মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, আশ্রয়কেন্দ্র বা জমিও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

ওয়াকফ সম্পত্তি যে উদ্দেশ্যে দান করা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় না। এটি বিক্রয় বা হস্তান্তরও করা নিষিদ্ধ।

হিন্দু সমাজে যেভাবে দেবোত্তর সম্পত্তি ধরা হয়, মুসলিম সমাজে ওয়াকফ তারই সমতুল্য একটি ধারণা।

তবে এই নতুন আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত চারটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, এআইএমআইএম, আম আদমি পার্টি ও আরজেডি-র নেতৃবৃন্দ এবং একটি সিভিল রাইটস গোষ্ঠী। তাদের দাবি, বিলটি অসাংবিধানিক এবং সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এসব মামলা গ্রহণ করে কি না এবং কী রায় দেয়।